বই ভাবনা: সিন্ধু সভ্যতার স্বরূপ ও সমস্যা

বইঃ সিন্ধু সভ্যতার স্বরূপ ও সমস্যা
লেখকঃ অতুল সুর
প্রকাশকঃ উজ্জ্বল সাহিত্য নন্দির, কলকাতা
প্রকাশকালঃ ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ।

লেখক পরিচিতিঃ সিন্ধু সভ্যতার সাথে রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় আর স্যার জন মার্শালের নাম ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে। ১৯২০’র দশকে সিন্ধু সভ্যতা আবিষ্কার হওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই অনুমান করেছিলেন এই সভ্যতা যতটা মনে হচ্ছে তার চেয়ে বেশি প্রাচীন। তাই এব্যাপারে আরো গবেষণা করার জন্য যোগ্য কাউকে পাঠানোর জন্য কলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি পাঠালেন জন মার্শাল। বইয়ের ৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখক দাবি করেছেন, তখনকার দিনে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে অভিজ্ঞ লোক একমাত্র তিনিই ছিলেন। তাই তাকেই পাঠানো হল।
১৯২৮ সালে মহেঞ্জোদারো নিয়ে গভীরতর গবেষনার জন্য অতুল সুর পৌছলেন সিন্ধু প্রদেশের লারকানায়।
বেশকিছুদিন আগে কোথাও পড়েছিলাম, দ্রুত একটা সিদ্ধান্তে পৌছে যাওয়ার একটা প্রবণতা অতুল সুরের লেখায় খুজে পান পাঠকেরা। এই বইটা পড়ার সময় আমার তেমন লাগেনি আসলে। বরং নিজের বক্তব্যের দূর্বল দিকগুলো অকপটে প্রকাশ করার মধ্যে বেশ বড় মনের একটা পরিচয় পাওয়া যায়।
তিনি যেহেতু সিন্ধু সভ্যতা নিয়ে গবেষনাকারী প্রথম বাঙালি গবেষকদের একজন তাই এই সভ্যতার ব্যাপারে আগ্রহী যে কেউ তার লেখা পড়তে আগ্রহী হবেন, সেটা বলাই বাহুল্য।
প্রাচীন ভারতের ব্যাপারে বেশ কিছু ইন্টারেসটিং বই লিখেছেন ঐতিহাসিক, নৃতাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক অতুল সুর। যেমনঃ বাঙালির নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, চৌদ্দ শতকের বাঙালি, বাংলা ও বাঙালি, দেবলোকের যৌনজীবন, ভারতের নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, প্রাগৈতিহাসিক ভারত, তিন শ বছরের কলকাতা, ভারতীয় বিবাহের ইতিহাস ইত্যাদি।

অধ্যায় সমূহঃ ১৪০ পৃষ্ঠার বইটিকে নয়টি অধ্যায়ে ভাগ করেছে লেখক। সেগুলো হলঃ ১. প্রাককথন ২.মহেঞ্জোদারোর কথা, ৩. সিন্ধু সভ্যতার উদ্ভব, ৪. সিন্ধু সভ্যতার ইতিহাস ও বৈদিক বৈরিতা, ৫. সিন্ধু সভ্যতার গঠনে প্রাগার্ধদের দান, ৬. সিন্ধু সভ্যতায় বিজ্ঞানের ভূমিকে, ৭. সিন্ধু সভ্যতায় প্রাগার্ধদের দান, ৮. সিন্ধু সভ্যতার লোকের কোন নরগোষ্ঠীর লোক ছিলেন, ৯. সিন্ধু সভ্যতার নগরসমূহের পতন। ননফিকশন বইয়ের পেছনে ইন্ডেক্স বা নির্ঘন্ট না থাকলে বিরক্ত লাগে। এই বইতে বেশ ভালোভাবে আছে। ব্যাপারটা আরামদায়ক।
বইয়ের অধ্যায় বিন্যাস দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, লেখক সিন্ধু সভ্যতার মোটামুটি একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এই বইতে। আর আমার মতে, পেরেছেনও বেশ ভালোভাবেই। আমি ইতিহাসের ছাত্র নই, তবুও বইটা পড়তে কোনো অসুবিধাই হয়নি, বেশ সহজে বুঝেছি। কোনো কোনো ব্যাপারে আরো জানার আগ্রহ পাচ্ছি। এটা অবশ্যই বইটার বিরাট সফলতা।
পৌনে এক শতাব্দীর বেশি সময় আগে লেখা এক্টা বই পড়তে যেসব অসুবিধা হওয়ার কথা সেগুলোও খুব বেশি ফেস করতে হয়নি। আমার কাছে লেখা বেশ আরামদায়ক মনে হয়েছে। সর্বোপরি আমি যে উদ্দেশ্যে বইটা পড়েছিলাম সেটা সফল হয়েছে, এটাই আসল কথা।

আমি যা ভাবছিঃ
প্রতিটা বই পড়ার পরে রিভিউ লেখার চেষ্টা করব বলে একরকম একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই রিভিউ সেই সিদ্ধান্তেরই বাস্তবায়ন। যদিও ব্যাপারটা যে চালিয়ে যেতে পারব সেব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এই বইয়ের ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণমূলক আলোচনায় যাওয়ার জন্য আমি সঠিক মানুষ নই। তাই সেদিকে যাচ্ছি না। বইটা পড়ার সময় গুগল কিপে এলোমেলোভাবে কিছু নোট রেখেছিলাম, সেগুলো এখানে যোগ করে দিলে পরবর্তীতে বেশ কাজে দেবে, তাই যোগ দিচ্ছি।

সিন্ধু সভ্যতা সমাচার বা হরপ্পার হালচালঃ
পেজ ১৫ তে “বাংলাদেশের চন্দ্রকেতুর গড়” নামে একটা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের কথা উল্লেখ আছে। এটা কোথায় জানতে হবে। এখান থেকে মৌর্য, গুপ্ত, শুঙ্গ, কুষাণ যুগের বিভিন্ন নিদর্শনের পাশাপাশি ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপির নমুনা আবিস্কৃত হয়।
পেজ ১৫ঃ রাজপ্রাসাদী প্রথা নামে এক্টা প্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়। এই প্রথা অনুযায়ী, নববিবাহিতা স্ত্রীকে বিয়ের রাতে রাজা বা জমিদারের শয়নকক্ষে পাঠাতে হবে সম্ভোগের জন্য। একই ধরনের আরেক প্রথার নাম “গুরুসম্ভোগ প্রথা”। হুতোম প্যাচার নকশা বইতে এই প্রথার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে। নৃতত্ত্ববিদরা এই প্রথাকে jus prima noctis নামে অভিহিত করেন। ২০০ বছর আগেও স্কটল্যান্ডে এই প্রথা প্রচলিত ছিল।
পেজ ১১ঃ হরপ্পা নামটি এসেছে রাজা হরপালের নাম থেকে। এই হরপালের সময় রাজ্যে রাজপ্রাসাদী প্রথা ছিল। জনশ্রুতি আছে, এমন বর্বর প্রথার কারণেই ধ্বংস হয়েছে হরপালের রাজ্য। জনশ্রুতি অনুযায়ী আরো ধারনা করা যায়, হরপালের রাজ্য ধ্বংস হয় ১২০০-১৩০০ বছর আগে। ক্যানিংহাম এ থেকে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে ৭১৩ খ্রিস্টাব্দে মুহম্মদ বিন কাসেম কর্তৃক রাজা হরপালের রাজ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
পেজ ১৫ঃ রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট ইত্যাদি নানান জায়গায় হরপ্পার সমসাময়িক সময়ে একই রকম জনপদ ছিল।
১৯৬১-৬৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ প্রত্নতত্ত্ব বিচাগ বীরভূম ও বর্ধমানে তাম্রাশ্ম সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কার করে। এই তাম্রাশ্ম সভ্যতা সম্পর্কে জানতে হবে। (তাম্রাশ্ম সভ্যতা বলতে কি তাম্রযুগের সিন্ধু সভ্যতাকে বুঝেয়েছেন?)
এই সভ্যতার বিস্তৃতি ছিল উত্তরে গুমলা ও রহমন ধেরি থেকে দক্ষিণে আরব সাগর পর্যন্ত।
পেজ ১৬: প্রাচীনকালে সারা পৃথিবীতে যত সভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছিল তাদের মধ্যে হরপ্পা সংস্কৃতি ছিল সবচেয়ে বিস্তৃত। পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক এম রাফিক মুঘল ১৪৪ টা সংস্কৃতি কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে একটি তালিকা করেছেন। এই তালিকার পরেও আরো অনেক কেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
পেজ ১৭ঃ হরপ্পা সভ্যতা কোনো আগন্তুক সভ্যতা ছিল না। এই সভ্যতা এখানেই উদ্ভূত হয়ে ধীরে ধীরে উন্নততর হয়েছে।
পেজ ১৮ঃ ভারতীয় মেসোলিথিক যুগের কৃষ্টির সাথে প্রাক-হরপ্পীয় কৃষ্টির মিল আছে বলে ধারনা করা হয়। এই প্রাক হরপ্পীয় যুগ ছিল আনুমানিক ৩৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে।
পেজ ৩৪-৩৫ঃ রাখালদাসই সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কারক। কিন্তু তার আবিষ্কারে ঈর্ষান্বিত কিছু লোক তার বিরূদ্ধে এমন চক্রান্ত করেছিল যে, শেষপর্যন্ত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা বাদ দিতে বাধ্য হন, রাখালদাস বন্দোপাধ্যায়।
পেজ ৩৫ঃ অসাধারণ পান্ডিত্যই রাখালদাসের কাল হয়ে দাড়িয়েছিল। তিনি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও থিওডর ব্লকের নিকট প্রত্নশিক্ষা লাভ করেছিলেন। অল্পকিছুদিনের মধ্যেই প্রাচীন লিপি ও প্রাচীন মুদ্রা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তার সমকক্ষ লিপিবিষারদ আজ পর্যন্ত জন্মান নি।
পেজ ৩৫ঃ মহেঞ্জোদারোর নিদর্শনগুলো দিকে দেখে স্যার জন মার্শালের ধারনা হয়েছিল, পরবর্তীকালে ভারতের হিন্দু সভ্যতার এই নগরীর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে। এই নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠান। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও নৃতত্ত্ব বিষয়ে অভিজ্ঞ কিছু গবেষক পাঠানোর আহবান জানান। তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন মানুষ ছিলেন শুধুমাত্র অতুল সুর।
পেজ ৩৬-৩৭ঃ মহেঞ্জোদারোতে গিয়ে অতুল সুর দেখেন, ১৮০ ফুট লম্বা ও ১০৮ ফুট চওড়া স্নানাগার, ১৫০*৭৫*২৫ ফুট শস্যাগার,। প্রায় ৩০-৩১ফুট প্রধান সড়কটি ছিল উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। এর সাথে সমান্তরালে থাকা সড়কগুলো চওড়ায় ছিল ২০-২৫ ফুট।
পেজ ৩৮- ” দুই বৎসর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুশীলন চালিয়ে এই তথ্য উপস্থাপন করলাম যে, হিন্দু সভ্যতার গঠনের মূলে বারো আনা ভাগ ছিল সিন্ধু উপত্যকার প্রাক আর্য সভ্যতা, আর মাত্র চার আনা ভাগ মন্ডিত হয়েছে আর্য সভ্যতার আবরণে।”
পেজ ৪১ঃ হরপ্পায় যে সভ্যতা পাওয়া গেছে তা মহেজোদারোর চেয়েও প্রাচীন তাই সিন্ধু সভ্যতার নামকরণ করা হয়েছে হরপ্পা সভ্যতা।
পেজ ৪১ঃ ১৫ লক্ষ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত সিন্ধু সভ্যতা সমসাময়িক অন্যসব সভ্যতার চেয়ে আয়তনে সবচেয়ে বড় ছিল।
পেজ ৫১ঃ সর্বপ্রথম প্রত্নপোলীয় আয়ুধ আবিষ্কৃত হয় ১৮৯৩ সালে মাদ্রাজের নিকট পল্লবরম নামক স্থানে।
পেজ ৫৮-৫৯ঃ সুমেরীয়দের কিংবদন্তি অনুযায়ী সুমেরীয়রা সেখানকার দেশজ অধিবাসী ছিল না, তারা প্রাচ্যদেশের কোনো পার্বত্য অঞ্চল থেকে সমুদ্রপথে সুমেরে এসেছিল। ডক্টর হল মত প্রকাশ করেছিলেন যে সুমেরীয়রা সম্ভবত ভারত থেকে সেখানে গিয়েছিল। যোগীনিতন্ত্রের এক শ্লোক অনুযায়ী জায়গাটা হল, ভারতের আসাম। অর্থাৎ আসাম অঞ্চল থেকে লোকজন সুমেরে গিয়ে সুমেরীয় সভ্যতার গোরাপত্তন করেছিল।
পেজ ৫৯ঃ মিশর, ক্রিট, সুমের, এশিয়া মাইনর, ও সিন্ধু উপত্যকা সহ অন্যত্র যে তাম্র সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল তার সূচনা সম্ভবত পূর্ব-ভারত ও বাঙলায় হয়েছিল। যুক্তি হিসেবে অতুল সুর বলেছেন, ভারতের এই অংশে বড় বড় তামার খনি ছিল যা তাম্রযুগের সূচনা করার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে পারে, আর তাছাড়া, প্রাচীন বাংলার প্রধান বন্দরের নাম তাম্রলিপ্তি হওয়াটাও একটা বড় কারণ।
পেজ ৫৯ঃ গঙারিডির বাঙালী বীরদের কথা বিভিন্ন প্রাচীন মিশরীয় (১৫০০ খ্রিপূ) পুথিতেও পাওয়া যায়।
পেজ ৫৮ঃ যেহেতু তাম্রশ্ম সভ্যতাই প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটিয়েছিল, সে হিসেবে বাংলাদেশ এই বিপ্লবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
পেজ ৬০ঃ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াই নবপোলীয় বিপ্লবের সুতিকাগার বলে মনে হয়। – সি ও সয়ার।
পেজ ৬১ঃ বর্ধমানের পান্ডুরাজার ঢিবিতে চারটি স্তরের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রথমটিঃ মাইক্রোলিথিক যুগের (এযুগে এক্টা বন্যা হয়েছিল), দ্বিতীয়টি ব্রোঞ্জ (এযুগে একাধিক অগ্নিকান্ড), তৃতীয়টি লোহা, চতুর্থটি মৌর্য্য যুগের।
পেজ ৬২ – ৬৩ঃ প্রস্তরযুগে মানুষের বসবাসের ধারাবাহিক নিদর্শন পশ্চিমবঙে পাওয়া যায়। এখানে প্লাইস্টোসিন যুগের মানুষের অস্থিও পাওয়া গেছে। অফর্থাৎ প্রথম মানব থেকেই এই ভূখন্ডে মানুষের বসবাস রয়েছে।
পেজ ৬৫ঃ চীন, সুমের ও মিশরের প্রাচীন সভ্যতার তুলনায় সিন্ধু সভ্যতা অনেক উন্নত ছিল। – Gregory Possehl, Pensilvania University.
পেজ ৬৫ঃ সিন্ধু সভ্যতার কয়েক্টি শহর শহর – মহেঞ্জোদারো, হরপ্পা, কালিবঙ্গন, লোথাল
পেজ ৭৪ঃ সিন্ধু সভ্যতার বিস্তৃত অঞ্চলে বানিজ্যে সুবিধার জন্য ওজনের ঐক্য ছিল। বিভিন্ন জায়গায় আবিষ্কৃত বাটখারা থেকে সেব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়।
পেজ ৭৫ঃ সুমেরের লোকজন ভারতকে মেলুয়া নামে চিনত। সুমেরীয়দের সাথে বানিজ্য ছিল। সমুদ্র ও স্থলপথে বানিজ্য হত। সিমেটিক রাজা প্রথম সারগনের সময় (খ্রি পূ ২৩৭১-২৩১৬) এই বানিজ্য বিশেষ সমৃদ্ধশালী ছিল।
পেজ ৭৭ঃ মহেঞ্জোদারোতে পাওয়া সীলগুলোতে লিখিত ৩০০ টি চিহ্নের সাথে ইস্টার আইল্যান্ডে পাওয়া ১২০টি চিহ্নের মিল পাওয়া যায়।- ফরাসী পন্ডিত মসিয়ে গুলাউম
পেজ ৮১-৮৫ ঃ সিন্ধু সভ্যতা ও আর্য সভ্যতা পুরোপুরি আলাদা। আর্যরা ছিল বর্বর জাতি। তারা যেখানেই গেছে সেখানেই উন্নত সভ্যতা ধ্বংস করে তাদের বর্বর সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছে। কিন্তু সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার ক্ষেত্রে তারা আর এমন করতে পারেনি। বরং সিন্ধু সভ্যতার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেরা বদলে গেছে। এজন্যই পরবর্তীকালে উদ্ভূত হিন্দু সভ্যতায় সিন্ধু সভ্যতার অনেক উপাদান দেখতে পাওয়া যায়।
পেজ ৮৬-৮৭ঃ আর্য শব্দটি মোটেই জাতিবাচক শব্দ নয়, এটি একটি ভাষাবাচক শব্দ। যে সব নরগোষ্ঠী আর্য ভাষাতে কথা বলত তাদেরকে আমরা আর্য বলি! নৃতাত্ত্বিক অনুসন্ধান থেকে জানা গিয়েছে যে, দুটি নরগোষ্ঠী এই ভাষায় কথা বলত, নর্ডিক ও আলপীয়। নিজেদের দেবতাদেরন নর্ডিকরা বলত দেব আর আল্লপাইয়রা বলত, অসুর।
পেজ ১১৭: স্যার মার্টিমার হুইটলারের মতে ঋগ্বেদে বর্ণিত ইন্দ্র দ্বারা ধ্বংসকৃত নগরী গুলোই সিন্ধু সভ্যতার নগরী।

“মহাভারত ও সিন্ধু সভ্যতা” শিরোনামে অতুল সুরের আরেকটা বই আছে। সেটা পড়ে দেখতে হবে।

Author: Moheul I Mithu

মহিউল ইসলাম মিঠু কৌতুহলী মানুষ। জানতে ভালোবাসেন। এজন্যই সম্ভবত খুব অল্প বয়সেই বইয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। পড়ার অভ্যাসটাই হয়তো ধীরে ধীরে লেখার দিকে ধাবিত করেছিল। তার পাঠকপ্রিয় অনুবাদ গুলোর মধ্যে রয়েছে: দি হবিট, দি লর্ড অফ দ্য রিংস, পার্সি জ্যাকসন, হার্ড চয়েসেজ, দি আইস ড্রাগন, লিজিয়ন, প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে, দি আইভরি চাইল্ড ইত্যাদি। বাংলাদেশে প্রথমসারির জাতীয় পত্রিকা, সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটের জন্য লিখেছেন বিভিন্ন সময়। তিনি বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন কিশোর-ম্যাগাজিন ‘আজবদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। বিশ্বখ্যাত ২০টির বেশি বই অনুবাদ করে বিভিন্ন স্তরের পাঠকের আস্থা অর্জন করেছেন, জিতে নিয়েছেন ভালোবাসা। তার অনুদিত কিছু বই বিভিন্ন সময় জাতীয় বেস্ট-সেলারের তালিকাগুলোতে ছিল। (লিখেছেন: লে: কর্নেল রাশেদুজ্জামান)

Share This Post On

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link
Powered by Social Snap