নওগাঁর নিয়ামতপুর। দিগন্ত ছোঁয়া সোনালী মাঠে পাকা ফসল ঢেউ তোলে বাতাসে। ক্লাসের বাংলা বইতে অনেকবার পড়া এই বর্ণনার প্রতিরূপ আমি স্বচক্ষে দেখেছিলাম নিয়ামতপুরে গিয়ে। ১২-১৩ বছর আগের কথা। যতদূর চোখ যায় পাকা সোনালী ফসলের সমুদ্রের সেই সৌন্দর্য এখনও আমার স্মৃতিতে স্পষ্ট। সেই থেকে নিয়ামতপুর আমার জন্য ভালো একটা স্মৃতি।
ধর্ষনের খবর পড়তে ভালো লাগে না। সাধারণত ওপেন করিই না। আজ নিয়ামতপুরের নামটা দেখেই মূলত ওপেন করলাম। করেই আরও বড় সারপ্রাইজ। এক হেডলাইনে পাঁচটা ধর্ষনের খবর। ধর্ষকদের একজন স্কুল ছাত্র, আরেকঘটনায় ধর্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছে এলাকার ইউপি সদস্য সহ স্থানীয় হর্তাকর্তারা। একটা ব্যাপার নিশ্চিত আমরা আমাদের ছেলে সন্তানদের একটা বড় অংশকে শুধু পুরুষাঙ্গের ধারক বানাতে পারছি, মানুষ বানাতে পারছি না (পুুরুষ তো দূরের কথা)। সবচেয়ে বড় দুঃখের কথা হল, এই পুরুষাঙ্গের ধারকরা আমাদেরই ভাই-ভাতিজা-সন্তান। এই লজ্জা সোনার বাংলা কোন সোনালী ফসলের চাদরে ঢাকবে?
এদিকে আবার আজ সেই রাফির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। রাফির কথা আমরা ভুলে গেছি বোধহয়। নুসরাত জাহান রাফি। শ্লিলতাহানির প্রতিবাদ করায় যার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। মৃত্যু্শয্যায় তার সুবিচারের আকুতি দুই বছর পরেও উচ্চ আদালতের কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
সমাজব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তরের প্রতিষ্ঠান হল পরিবার, আর সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান আদালত। বাংলাদেশে সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ সব প্রতিষ্ঠানই বোধহয় এখন ধর্ষকদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষক। এই ধর্ষকরা কাদের নির্যাতন করছে, বাংলাদেশেরই নারীদের, আমাদেরই মায়েদের, বোনেদের, প্রিয়তমাদের। আমরা সবাই দায়ী। এই লজ্জা আমরা কী দিয়ে ঢাকব?