রিভিউ দিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ইপ্তি। তিনি সবসময়ই খুব দ্রুত আমার বইয়ের রিভিউ দিয়ে দেন। ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না।
বইয়ের নামঃ দি ফেলোশিপ অফ দ্য রিং (লর্ড অফ দ্য রিংস)
লেখকঃ জে. আর আর টোলকিন
অনুবাদঃ মহিউল ইসলাম মিঠু
পৃষ্ঠাঃ ৩৩৬
মূল্যঃ ৪০০
প্রকাশক: ঐশ্বর্য প্রকাশ
প্রকাশকাল: ২০২০
ভাষাতত্ত্ববিদ জে. আর. আর. টোলকিন শুধুমাত্র বাচ্চাদের শোনানোর জন্য রূপকথার গল্প লিখতেন। নিজের ছেলেকে শোনানোর জন্য লিখেন “দি হবিট”। সেখান থেকেই যাত্রা শুরু হয় মিডল-আর্থ ইউনিভার্সের। পরবর্তীতে এই ইউনিভার্সের “দি লর্ড অফ দ্য রিংস” জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ফ্যান্টাসি হিসেবে।
কাহিনী সংক্ষেপঃ
যেই পৃথিবীতে ডর্ফ, এলফ, হবিট, মানুষ, অর্ক, মায়ারা থাকতো এটা সেই পৃথিবীর গল্প। এদের মধ্যে এলফরা কিছু শক্তিশালী আংটি বানিয়েছিল। আংটিগুলোর ক্ষমতা এরকম যে, এই আংটিগুলো যাদের কাছে থাকবে তারা পৃথিবীতে রাজত্ব করবে। অপরদিকে এই আংটিগুলোর উপর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ডার্কলর্ড সাউরন বানালো “দি ওয়ান রিং”। এই ওয়ান রিং যার কাছে থাকবে সে হবে পৃথিবীর অধিপতি। গল্পের কেন্দ্রবিন্দু এই ওয়ান রিং।
“এই এক আংটির শাসনে সবাই, এই আংটিতে সব অশুভ ধাঁধা;
এই আংটির টানে আসে সবাই, অশুভের জালে পরে যায় বাধা।”
নানান হাত ঘুরে এই আংটি আসে শান্তিপ্রিয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত হবিট ফ্রোডোর হাতে। সাউরনের থেকে পালিয়ে ধ্বংস করতে হবে এই আংটিকে। উপায় একটা-ই, মাউন্ট ডুমের জ্বলন্ত লাভায় আংটিটা ফেলে দেয়া। সাউরনের নজর এড়িয়ে ফ্রোডোর বাসভূমি শায়ার থেকে শুরু হলো যাত্রা। গন্তব্য মাউন্ট ডুম।
ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌস ইপ্তি
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ
মিডল আর্থের সাথে পরিচয় হবিট থেকে। তারপর লর্ড অফ দ্য রিংস মুভি দেখা। মূল বইটা পড়বো পড়বো করেও যখন পড়া হচ্ছিল না তখন হাতে এলো এই অনুবাদটা। প্রকাশিত হবে ছয়টি পর্বে। এটি প্রথম পর্ব। বই থেকে যখন মুভি করা হয় তখন অনেক ঘটনা বাদ পড়ে যায়। মূল ঘটনা জানা থাকলেও বইয়ের মধ্যে খুটিয়ে খুটিয়ে বাদ পড়ে যাওয়া ঘটনাগুলো খুজে বের করার আনন্দ উপভোগ করেছি খুব।
মিডল আর্থের যে প্রসঙ্গে কথা না বললেই নয় তা-হলো এর ক্যারেক্টার বিল্ডিং। প্রত্যেকটা চরিত্রই গুরুত্বপূর্ণ। আর চরিত্রের বর্ণনায় প্রেমে পড়ে যেতে পারেন। অ্যারাগর্নের বর্ণনাই ধরুন-
চকচক করলেই যেমন হয় না সোনা,
পথে পথে ঘুরলেও সবাই ভবঘুরে হয় না।
চাল যত পুরোনো হয় ভাত বাড়ে তত,
ভিত তত শক্ত হয়, গভীরে থাকে যত।
নিরীহ ছাইয়ের তলেও থাকতে পারে আগুন,
শীত যত তীব্র হোক একদুইন আসেই ফাগুন।
ভাঙা তরবারিও একদিন হতে পারে সোজা,
ফেরারি ভবঘুরে একদিন হতে পারে রাজা।
এরকম বঙ্কিমি ইংরেজি বই এত সহজ-সরল বাংলায় অনুবাদ দেখে রাগ লাগতে পারে। কি যাচ্ছে-তা অনুবাদ করছে ভেবে মূল বইও উলটে দেখতে চাওয়ার বাসনা জাগতে পারে মনে। তার আগে লাইনগুলো আরেকবার পড়ে ভাবার্থ চিন্তা করলে রাগটা বিস্ময়ে পরিণত হবে।
অনুবাদ ও প্রোডাকশনঃ
অনুবাদক মহিউল ইসলাম মিঠু এই বইয়েও তার অনুবাদের চিরাচরিত বিশেষত্ব “সাবলীলতা” ধরে রেখেছেন। বইয়ের কাগজের মান, ফন্ট সাইজ, লাইন স্পেসিং সবকিছুতেই যে পাঠকের সুবিধার কথা চিন্তা করা হয়েছে তা স্পষ্ট। আর বইয়ের সাথের ম্যাপ দুইটাও বেশ নজর কাড়ে। তবে পৃষ্ঠা অফহোয়াইট হলে পারফেক্ট হতো।
রেটিং ৯/১০
বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন: দি লর্ড অফ দ্য রিংস (বুক ১)- বই পরিচিতি